সোমবার, ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ০৮:২১ অপরাহ্ন

শিরোনাম
দুর্গাপূজা শান্তিপূর্ণভাবে সম্পন্ন করতে সকল প্রস্তুতি রয়েছে- স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বাংলাদেশের নিরাপদ খাদ্য সম্পর্কিত গবেষণালব্ধ ফলাফল নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিতকরণে এবং জনহিতকর কাজে প্রয়োগ করা হবে – খাদ্য সচিব মোঃ মাসুদুল হাসান উপদেষ্টা সুপ্রদীপ চাকমা’র সঙ্গে স্ক্যান্ডিনেভিয়ান রাষ্ট্রদূতদের সৌজন্য সাক্ষাৎ নির্বাচনের সময় সাংবাদিকদের সতর্ক, সচেতন ও দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করতে হবে –তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা ঢাকার টঙ্গী এলাকা হতে ইতালিতে পাচারকালে টাওয়ালের মধ্যে বিশেষ কায়দায় (Chemical Impregnation) লুকায়িত অবস্থায় ৬.৪৪ কেজি ভয়ংকর মাদক কিটামিন জব্দ এবং চাঁদপুর ও ফরিদপুর হতে ২ জন আসামি গ্রেপ্তার। উচ্চাভিলাষী জলবায়ু পদক্ষেপে বাংলাদেশ-ব্রাজিল ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করবে – পরিবেশ উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান জাহাজ নির্মাণ আইন যুগোপযোগী করা হবে: শিল্প উপদেষ্টা ২৪ ঘণ্টায় গোপালগঞ্জ জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আমির হামজা ও কেবি কনভেনশন হল ভাড়া প্রদানকারী মোঃ বায়েজিদসহ আওয়ামী লীগ ও এর অঙ্গসংগঠনের আরও ১৩ নেতাকর্মী গ্রেফতার করেছে ডিবি বেনাপোল আইসিপিতে ১টি পিস্তল ও ৯৩ রাউন্ড গুলিসহ দুই ভারতীয়কে আটক করেছে বিজিবি ক্যালেন্ডার মেনে বিসিএস পরীক্ষা আয়োজনের নির্দেশ প্রধান উপদেষ্টার

জীবনে দুবার গোসল করেছেন যিনি

Enbnews24 | ইএনবি নিউজ ডেস্ক- / ৬১৫ পাঠক
প্রকাশকাল সোমবার, ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ০৮:২১ অপরাহ্ন

পৃথিবীতে এমন অনেক মানুষ রয়েছে যারা না খেয়ে থাকতে পারে কিন্তু গোসল ছাড়া থাকতে পারে না। কেউ কেউ আছেন যারা দিনে ২ থেকে ৩ বার গোসল করেন। তবে এর বিপরীতে অনেক মানুষ রয়েছে যাদের গোসল করতে অনীহা দেখা যায়। তবে এই তালিকায় শিশু, কিশোর, বা বয়স্কদের সংখ্যা কম নয়। অনেকেই জীবনের কিছুটা সময় নানা কারণে গোসল না করে কাটিয়েছেন।

তবে সব রেকর্ড ছাড়িয়ে গেছেন লন্ডনের জেন লিউসন। যিনি লেডি লুসন নামেও পরিচিত ছিলেন। খুবই অদ্ভুত আচরণের ছিলেন এই নারী। তিনি লন্ডনের স্ট্র্যান্ডে ১৭০০ সালে জন্মগ্রহণ করেন। ১১৬ বছর বয়সে মারা যাননি। কিন্তু জীবদ্দশায় একবারও গোসল করেননি তিনি। বেশ বিলাসবহুল জীবন কাটিয়েছেন এই নারী। তবে ঠান্ডা লাগার ভয়ে এবং নানান কুসংস্কার মানতেন, এজন্য কোনোদিন শরীরে পানি ছোঁয়াননি তিনি। গোসলের পরিবর্তে শরীরে শূকরের চর্বি মাখতেন তিনি। ধারণা করা হয়, নোংরা থাকার কারণে শরীরে নানান ব্যাক্টেরিয়ার সংক্রমণ দেখা দেয়। ফলে তিনি মারা যান।

তার মৃত্যুর পর তার বাড়িতে যারা গিয়েছেন তাদের কাছ থেকে জানা যায় যে, জেনের বাড়ি কতটা নোংরা ছিল। তারা ভেতরে গিয়ে একেবারে হতবাক হয়ে যান সবাই। সিলিংয়ে ময়লা পুরু হয়ে গিয়েছে। জানালা, দরজা, ফ্লোর সবখানেই ময়লার আস্তরণ। ফায়ার প্লেসের ছাই সরানো হয়নি বোধহয় বছর খানিক ধরে। গ্রেট এক্সপেকটেশনস উপন্যাসের স্পিনস্টার মিস হাভিশামের চরিত্রটি জেনের আদলেই তৈরি বলে মনে করেন অনেকেই। এছাড়াও ১৮৪৬ সালে আলফ্রেড ইনিগো সাকলিং-এর দ্য হিস্টোরি অ্যান্ড অ্যান্টিকুইটিস অব দ্য কাউন্টি অব সাফোক বইতে জেনের সম্পর্কে বিস্তারিত জানা যায়।

ইতিহাসে আরও অনেক ব্যক্তি আছেন যারা জীবনে কেউ একবারও গোসল করেননি। কেউ কেউ আছেন জীবনে একবার বা দুবার গোসল করেছিলেন। স্পেনের রানি ইসাবেল জীবনে মাত্র দুইবার গোসল করেন। যেদিন তার জন্ম হয় এবং দ্বিতীয় ও শেষবার তার বিয়ের দিন। এমনকি তাদের এতো বড় প্রাসাদে ছিল না কোনো বাথরুম। তারা শরীরে ব্যবহার করতেন নানান ধরনে সুগন্ধি। এমনকি রানি প্রথম এলিজাবেথ বছরে একবার গোসল করতেন।

মধ্যযুগে গোসল ছিল এক রকম বিলাসিতা। ফরাসি ইতিহাসবিদ জুলেস মিসলেট ইউরোপের মধ্যযুগকে ‘গোসল ছাড়া ১০০০ বছর’ হিসেবে বর্ণনা করেছেন। ইউরোপীয়দের মনে ধারণা ছিল, গোসল করলে রোমকূপের মধ্যে দিয়ে দেহে রোগ-জীবাণু প্রবেশ করে এবং সেই কারণে তারা গোসল করতেন না।

ছবির মতো এখনকার যে ঝকঝকে ইউরোপ দেখতে পান। তা একসময় ছিল বস্তির মতো। তখনকার ১০ হাজার রাজ প্রাসাদসহ কর্মচারী ও চাকরদের থাকার স্থান সবকিছুই ছিল খুবই অপরিষ্কার। প্রায় সব প্রাসাদের রান্নাঘর ছিল উন্মুক্ত। পাশেই ছিল চাকরদের টয়লেট। রান্নাঘরে ধূলা ময়লা, দুর্গন্ধ আর ইঁদুরে ভরা থাকত। তার মধ্যেই তৈরি করা হতো খাবার। সেসময় ইউরোপের মানুষ যেখানে সেখানে ময়লা আবর্জনা ফেলে রাখত এমনকি টয়লেটও করত।

১৫৩৫ এর জুলাই মাসে কিং অষ্টম হেনরি ৭০০ এরও বেশি লোক নিয়ে পুরো ইউরোপ পরিদর্শনের উদ্যোগ নিলেন। চার মাসের মধ্যে পুরো ইউরোপের ৩০ টি রাজবাড়ি, অভিজাত আবাস এবং ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের অন্দর পরিদর্শন করবেন। যেই ভাবা সেই কাজ। তারা এসব পরিদর্শন করে বেশ অবাক হলেন। এতো নোংরা তারা কোথায় সরাবেন? তাদের মাথায় বাজ পড়ল যেন!

প্রাসাদগুলোর পাশাপাশি বিভিন্ন রাজদরবার সহ রাস্তা ঘাটেও বিভিন্ন বর্জ্য, ফেলে দেয়া খাবার ও পশুর বর্জ্যে সয়লাব ছিল। সেইসঙ্গে কাকের উপদ্রবে রাস্তা ও ফাঁকা স্থানগুলো সবসময় মুখরিত থাকত। এসব পরিষ্কার করতে হেনরির লোকদের অনেক বেগ পেতে হয়। কারণ প্রাসাদগুলো এতোটাই নোংরা ছিল। যা পরিষ্কার করতে তাদের অনেক সময় লেগেছিল। এসব রাজপ্রাসাদগুলোও ছিল বিশাল এবং অনেক কক্ষবিশিষ্ট।

রাশিয়ার ক্যাথরিন দ্য গ্রেটের রাজ প্রাসাদটি ছিল ভয়াবহ দুর্গন্ধযুক্ত। সেখানকার রান্নাঘর ভর্তি ছিল নোংরা হাড়ি পাতিল এবং পোকা মাকড়ে ঠাসা। এমনকি তার ঘরে ১০০ এরও বেশি নোংরা কাপড় পাওয়া যায়, যেগুলো কখনো ধোয়া হয়নি। তখনকার সময় নারীরা চুল পরিষ্কার করতেন অ্যালকালাইনের মিশ্রণ দিয়ে। সাবান ও পানি ছোঁয়া যেন তার বারণ ছিল। অন্যদিকে চতুর্থ লুইয়ের ছবিতে যতই অ্যামব্রয়েডারি পোশাকের ঝলকানি দেখুন না কেন সেগুলো কখনো ধোয়া হয়নি। এই পোশাকগুলোও ছিল খুবই নোংরা আর দুর্গন্ধময়।

ইংল্যান্ডের রাজা দ্বিতীয় চার্লস তার বিছানায় পোষ্যদের নিয়ে ঘুমাতেন। এছাড়াও তার ঘর, পোশাক ছিল নোংরা ও দুর্গন্ধযুক্ত। গোসলও করতেন না কখনো। রয়্যাল আর্ট অব পয়জন এর লেখক এলিয়েনর হারম্যান এসব রাজকীয় প্রাসাদ সম্পর্কে বলেছেন, মল-মূত্র সব জায়গায় ছড়িয়ে থাকত। নারী ও পুরুষরা যেখানে সেখানে মল-মূত্র ত্যাগ করতেন। ১৬৭৫ সালে একটি প্রতিবেদনে প্যারিসের লুভর প্রাসাদ সম্পর্কে বলা হয়েছিল, সেখানকার সিঁড়ির উপরে, দরজার পিছনেসহ প্রায় সর্বত্রই মল-মূত্রের ছড়াছড়ি ছিল।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *