শুক্রবার, ১২ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ০১:১৮ অপরাহ্ন
গতকাল (শনিবার) ‘বণিক বার্তা পত্রিকায় “সরকারি অর্থে হজে ধর্ম মন্ত্রণালয়ের মালি, চালক গানম্যান ও পিয়ন; নির্দেশনা না মেনে সফরসঙ্গী উপদেষ্টার স্ত্রী ও দুই বোন” শিরোনামে সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে। পরবর্তীতে এ পত্রিকার সূত্রে বাংলাদেশ প্রতিদিন ও দৈনিক কালেরকণ্ঠ একই সংবাদ প্রকাশ করেছে। এসংবাদে মনগড়া ও ভুল তথ্য উপস্থাপন করা ছাড়াও ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)’র নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামানের বক্তব্যে উদ্ধৃত তথ্যের সত্যতা যাচাই না করেই সংবাদ প্রকাশ করায় জনমনে বিভ্রান্তি সৃষ্টি হয়েছে এবং ধর্ম উপদেষ্টাসহ সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন হয়েছে। এ জাতীয় সংবাদের বিষয়ে ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয় তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছে।
প্রতিবাদলিপিতে বলা হয়েছে “সরকারি অর্থে হজে ধর্ম মন্ত্রণালয়ের মালি, চালক গানম্যান ও পিয়ন; নির্দেশনা না মেনে সফরসঙ্গী উপদেষ্টার স্ত্রী ও দুই বোন”- এরূপ শিরোনাম করাটা দুঃখজনক ও নিতান্তই উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। সরকারি মাধ্যমে আগত হজযাত্রীদের সেবা ও হজ ব্যবস্থাপনার স্বার্থে ‘হজ ও উমরাহ ব্যবস্থাপনা বিধিমালা, ২০২২’ এর আলোকে সুনির্দিষ্ট দায়িত্ব পালনের জন্যই ধর্ম মন্ত্রণালয়ের বিভিন্ন শ্রেণির কর্মকর্তা-কর্মচারীকে সৌদি আরবে প্রেরণ করা হয়েছে।
হজ ব্যবস্থাপনা অত্যন্ত চ্যালেঞ্জিং একটি বিষয়। এ চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় মন্ত্রণালয়ের সকল স্তরের কর্মকর্তাদেরকে একটি টীম স্পিরিট নিয়ে কাজ করার প্রয়োজন হয়। ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অফিস সহকারী ও কম্পিউটার মুদ্রাক্ষরিক, ব্যক্তিগত কর্মকর্তা, অফিস সহায়ক, গানম্যান, ড্রাইভার, মালী তথা সকল পর্যায়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীর অক্লান্ত পরিশ্রমের কারণেই হজের কার্যক্রম সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন হয়ে থাকে।
হজ মৌসুমে মক্কা, মদিনা ও জেদ্দায় তিনটি অফিস চালু করার প্রয়োজন হয়। এখানে কম্পিউটার অপারেটর, অফিস সহকারী ও অফিস সহায়ক প্রয়োজন। সরকারি হাজিরা যেসব হোটেলে অবস্থান করেন, সেখানে তিন শিফটে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সমন্বয়ে তিন-চারজনকে দায়িত্বে রাখা হয়। হাজিদের রুমের কোনো সমস্যা বা প্রয়োজন, হারানো হাজিকে খুঁজে বের করা, অসুস্থ হাজির হজ পালনে সহায়তা করা, হাজিদের লাগেজ হারিয়ে গেলে তা খুঁজে বের করে হোটেলে পৌঁছে দেয়া, কোনো হাজি অসুস্থ হলে তাকে মেডিকেল সেন্টারে নিয়ে যাওয়া, পথ হারিয়ে ফেললে তাকে সংশ্লিষ্ট হোটেলে পৌঁছার ব্যবস্থা করা, কেউ মারা গেলে তার দাফনসহ অন্যান্য বিষয় তদারকি করা, বেসরকারি এজেন্সির হাজিদের আবাসন ও অন্যান্য বিষয়ে খোঁজখবর নেয়া, হাজিদের নিকট থেকে প্রাপ্ত অভিযোগ নিরসন করা, কোন হাজি কখন মিনা-আরাফা-মুজদালিফায় যাবেন, কখন মদিনায় জিয়ারায় যাবেন, কখন দেশে ফিরবেন সেটা দেখভাল করার কাজ ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা করে থাকেন।
এসকল কর্মকর্তা-কর্মচারীদের অক্লান্ত পরিশ্রমের কারণেই এবছর সরকারি মাধ্যমের কোন হাজী কিংবা তাদের কারো লাগেজ হারানো যায়নি এবং সকলেই সুন্দরভাবে হজের আনুষ্ঠানিকতা পালন করতে পেরেছে।
উল্লেখ্য, এবছর ইন্দোনেশিয়া তাদের ২ লাখ ২১ হাজার হাজীর জন্য চার হাজারের বেশি কর্মকর্তা-কর্মচারী সৌদি আরব প্রেরণ করেছেন। সে হিসেবে আমাদের দেশের ৮৭ হাজার হাজীর জন্য ১,৫৭৪ জন কর্মকর্তা-কর্মচারী নিয়োগ করা সমীচীন ছিল। অথচ আমরা মাত্র ২৯৩ জন জনবল দিয়েই আমাদের হাজীদের সেবা প্রদান করেছি।
সরকারি ব্যয়ে সফরসঙ্গী করার বিষয়ে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের একটি পরিপত্র আছে, এটি সত্য। মূলত সরকারি অর্থ সাশ্রয়ের জন্যই এরূপ পরিপত্র জারি করা হয়েছে। ধর্ম উপদেষ্টার স্ত্রী ও দুই বোন তাদের নিজ খরচে হজব্রত পালনের জন্য সৌদি আরব এসেছেন। তাদের টাকা জমাদানের প্রমাণক মন্ত্রণালয়ে সংরক্ষিত আছে। এসংক্রান্ত আদেশও সংশ্লিষ্ট প্রতিবেদককে সরবরাহ করা হয়েছে। উল্লেখ্য, তাদের সাথে অন্য কোন মাহরাম পুরুষ না থাকায় ধর্ম উপদেষ্টা তাদের মাহরাম হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। সরকারি আদেশের অপব্যাখ্যা করে ধর্ম উপদেষ্টা ও তাঁর পরিবারকে হেয় করার হীন উদ্দেশ্য থেকেই এরূপ শিরোনাম করা হয়েছে।
নাম-পরিচয় প্রকাশ না করে খাতসংশ্লিষ্ট হিসেবে আখ্যা দিয়ে উদ্ধৃত করা হয়েছে যে, ‘যেসব কারণে মন্ত্রণালয়ের খরচে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের হজ টিমের সদস্য করা হয়, সৌদি সরকার সে সেবাগুলো দিয়ে থাকে। এজন্য সরকার আলাদা চার্জও নেয়।’ এধরনের মন্তব্য একেবারেই ভিত্তিহীন ও কল্পনাপ্রসূত। এবছরের হজ প্যাকেজ দেখলেই বিষয়টি স্পষ্ট হবে। ধর্ম বিষয়ক মন্…