বৃহস্পতিবার, ২৪ জুলাই ২০২৫, ০২:৩৭ পূর্বাহ্ন

শিরোনাম
বাণিজ্য উপদেষ্টার সাথে জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থার সাউথ-সাউথ অ্যান্ড ট্রায়াঙ্গুলার কো-অপারেশন বিভাগের পরিচালক এর বৈঠক জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে ভর্তি ৪৪ জনের মধ্যে আটজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টার সাথে পাকিস্তানের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সৌজন্য সাক্ষাৎ সোহাগ হত্যা মামলার আরও দুই আসামি গ্রেফতার ১০,০০০ পিস ইয়াবাসহ তিন মাদক কারবারিকে গ্রেফতার করেছে ডিবি-গুলশান* মাইলস্টোন স্কুলে বিমান দুর্ঘটনায় হতাহতের তালিকা প্রস্তুত করতে স্কুল কর্তৃপক্ষের কমিটি গঠন প্রকৃতি-ভিত্তিক সমাধান এবং উন্নত দেশগুলোকে যথাযথভাবে জলবায়ু দায়িত্ব পালনের আহ্বান – উপদেষ্টার সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান গুলিস্তানে ছাত্রলীগের দুই সদস্য ককটেলসহ গ্রেফতার র্ণফুলী টানেলের মেইনটেন্যান্স কাজের জন্য ট্রাফিক ডাইভারসন শিক্ষা সচিব পরীক্ষা পেছাতে রাজি হয় নাই শিক্ষার্থীদের বিক্ষুব্ধ করতেই এই কৌশল

প্রকৃতি-ভিত্তিক সমাধান এবং উন্নত দেশগুলোকে যথাযথভাবে জলবায়ু দায়িত্ব পালনের আহ্বান – উপদেষ্টার সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান

মোঃ সিকান্দার আলী / ৫ পাঠক
প্রকাশকাল বৃহস্পতিবার, ২৪ জুলাই ২০২৫, ০২:৩৭ পূর্বাহ্ন

পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন এবং পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান আজ বৈশ্বিক অংশীজনদের প্রকৃতি-ভিত্তিক সমাধান গ্রহণে এবং উন্নত দেশগুলোকে যথাযথভাবে তাদের জলবায়ু দায়িত্ব পালনের আহ্বান জানিয়েছেন। আজ সকালে
“জলবায়ু পরিবর্তনে সম্প্রদায় ও বাস্তুতন্ত্রের সহনশীলতা বৃদ্ধি” প্রতিপাদ্যে থাইল্যান্ডের ব্যাংককে অনুষ্ঠিত মেঘনা নলেজ ফোরাম II (MKF II)-এ ঢাকা থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে তিনি বলেন, “বিশ্বের উন্নয়ন ভাবনাকে অবশ্যই পরিবর্তন করতে হবে। এটি কম প্রতিকূল, কম সম্পদ-কেন্দ্রিক এবং আরও বেশি প্রকৃতি-কেন্দ্রিক হতে হবে।”

বাংলাদেশের নদী এবং জাতীয় পরিচয়ের গভীর সম্পর্ক তুলে ধরে তিনি বলেন, “বাংলাদেশকে নদীর দেশ বললে ভুল হবে না। নদী ও নদীর পরিবেশ আমাদের অস্তিত্বের অবিচ্ছেদ্য অংশ।” তিনি প্রতিবেশী দেশ—নেপাল, ভারত ও চীনের সঙ্গে আন্তঃসীমান্ত নদী ব্যবস্থাপনায় আরও জোরালো আঞ্চলিক সহযোগিতার ওপর গুরুত্বারোপ করেন। উপদেষ্টা জানান, বাংলাদেশের চারটি প্রধান নদী অববাহিকা প্রতিবেশী দেশগুলোর সঙ্গে ভাগাভাগি করা—ফলে সহযোগিতামূলক পরিবেশ শাসন ব্যবস্থা গড়ে তোলা অত্যন্ত জরুরি।

তার বক্তব্যে একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় ছিল “নদীর অধিকার” সংক্রান্ত আলোচনা। তিনি বলেন, “আমাদের নদীগুলোকে শুধু নিজেদের অস্তিত্ব রক্ষার জন্য নয়, বরং তাদের নিজস্ব অধিকারকে স্বীকৃতি দিয়েও রক্ষা করা উচিত।” তিনি উল্লেখ করেন, বিশ্বের বিভিন্ন দেশের বিচারব্যবস্থা ইতোমধ্যে নদীর অধিকারকে স্বীকৃতি দিতে শুরু করেছে, এবং আন্তর্জাতিক ফোরামগুলোতেও এ বিষয়ে আলোচনা হওয়া উচিত।

সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বাংলাদেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের একটি বিশেষ ভৌগোলিক ও পরিবেশগত অঞ্চল হাওর সম্পর্কে বলেন, “হাওর বাংলাদেশের একটি অনন্য প্রতিবেশব্যবস্থা।” কৃষি, মাছ চাষ, পর্যটন, এবং পরিযায়ী পাখিদের আবাসস্থল হিসেবে হাওর অঞ্চলের তাৎপর্য ব্যাখ্যা করেন তিনি। তবে হাওর ও মেঘনা অববাহিকা আজ পরিবেশ দূষণ, বালু উত্তোলন, অনিয়ন্ত্রিত উন্নয়ন ও ঘনঘন আকস্মিক বন্যার হুমকির মুখে রয়েছে বলে উপদেষ্টা সতর্ক করেন। প্রতিবেশী দেশগুলোর সঙ্গে কার্যকর পূর্ব সতর্কতা ব্যবস্থা না থাকার বিষয়েও উদ্বেগ প্রকাশ করেন তিনি এবং এ বিষয়ে দক্ষিণ এশিয়ার যুবসমাজকে তথ্যপ্রবাহ ব্যবস্থার উন্নয়নে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান।

তিনি জানান, বাংলাদেশ প্রথম দক্ষিণ এশীয় দেশ হিসেবে জাতিসংঘের আন্তর্জাতিক নদী ও হ্রদ সুরক্ষা সংক্রান্ত কনভেনশন-এ সম্পৃক্ত হয়েছে, যা এই অঞ্চলে পরিবেশ নেতৃত্বের অন্যতম দৃষ্টান্ত। তবে আঞ্চলিক সংস্থা সার্ক এখনো নদী বিষয়টিকে বহুপাক্ষিক নয়, বরং দ্বিপাক্ষিক বিষয় হিসেবে বিবেচনা করে—যা আঞ্চলিক সহযোগিতাকে বাধাগ্রস্ত করে বলে মন্তব্য করেন তিনি।

বক্তব্যের শেষে উপদেষ্টা বলেন, “যখন সরকারগুলো পরিবেশ ব্যবস্থাপনায় ঐকমত্যে পৌঁছাতে ব্যর্থ হয়, তখন এ ধরনের ফোরামগুলোতে কমিউনিটির কণ্ঠস্বর এবং জ্ঞানকে প্রাধান্য দেওয়া অত্যন্ত জরুরি। সহযোগিতাই জলবায়ু সহনশীলতার পথ।”

অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন ইন্দ্র মণি পান্ডে, সেক্রেটারি জেনারেল, বিমসটেক; ড. পাই-চি লি, প্রেসিডেন্ট, এশিয়ান ইনস্টিটিউট অফ টেকনোলজি, থাইল্যান্ড; ড. দিন্দো ক্যাম্পিলান, আঞ্চলিক পরিচালক, আইইউসিএন, এশিয়া; রাকিবুল আমিন, প্রধান, প্রোগ্রাম ম্যানেজমেন্ট, আইইউসিএন, এশিয়া; ফাইয়াজ মুরশিদ কাজী, বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত, থাইল্যান্ড; বিশ্বরঞ্জন সিনহা, সিনিয়র প্রোগ্রাম অফিসার, আইইউসিএন, সাউথ এশিয়া; জন স্যামুয়েল, আঞ্চলিক পরিচালক, অক্সফাম এশিয়া; ড. মেধা বিশ্বাস, সহযোগী অধ্যাপক, আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগ, সাউথ এশিয়ান ইউনিভার্সিটি প্রমুখ।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *