সোমবার, ০১ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ০৬:৪৮ অপরাহ্ন
নিজস্ব প্রতিবেদকঃ
নড়াইল জেলার লোহাগড়া উপজেলার ১ নং ওয়ার্ড মাকড়াইল গ্রামের সাবেক আওয়ামীলীগ সহ-সভাপতি হেমায়েত মোল্যা এলাকায় জনদূর্ভোগ সৃষ্টি করে বালু ব্যবসা করছে। শতাধিক মানুষের নাম, সাক্ষর ও টিপসই সম্বলিত আবেদনপত্র প্রশাসনের নিকট পাচ-সাতবার জমা দিলেও, জেলা প্রশাসক কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছেন না বরং উক্ত আওয়ামীলীগ সন্ত্রাসীর জন্য লক্ষ লক্ষ টাকা লোকসান দিচ্ছে।
তিনি পেনাল কোড ১৮৬০ এর ২৬৮, ২৬৯ উপেক্ষা করে, পরিবেশ সংরক্ষণ আইন, পরিবেশ নীতিমালা, ভূমি ব্যবহার নীতিমালা ইত্যাদি উপেক্ষা করে ঘনবসতিপূর্ন এলাকায় বালুর বেড তৈরি করে ব্যবসা করছে এমনকি প্রশাসন,মৌখিক ভাবে ইজারা বন্ধ, একাধিকবার বেড অপসারণের নির্দেশ দিলেও তিনি কর্নপাত করছেন না।
এলাকাবসীর অভিযোগ, একাধারে বালু পরিবহনে ব্যবহৃত লাটার তীব্র শব্দে এলাকাবাসী অতীষ্ট, উচু বালুর বেড থেকে বালু উড়ার ফলে জনজীবনে ভোগান্তি তৈরি হচ্ছে, খাবারের ভিতরও বালু পাওয়া যাচ্ছে। বালু নিসৃত পানিতে বসতবাড়ি ও ফসলি জমি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। তৃতীয় শ্রেনীর লাইসেন্স বিহীন অপ্রাপ্তবয়স্ক থ্রিলার লাটা চালক ও সহযোগী কতৃক স্কুলে চলাচলরত কিশোরীদের প্রতিনিয়ত বুলিং ও ইভটিজিং, অতি গুরুত্বপূর্ণ
রাস্তাটির ক্ষতিসাধন, অত্যন্ত ঘনবসতিপূর্ণ স্থানে এরকম বিশালাকৃতির কয়েকটি বালুর বেড থাকায় জনগনের ভোগান্তি চরমে। প্রতিবেশী অসংখ্য বাড়িতে লাটার তীব্র শব্দে শিশু ও বৃদ্ধদের হার্টবিট ফ্রিকোয়েন্সি অস্বাভাবিক হয়ে যায়, তীব্র বায়ুদূষণ ও ধুলায় আচ্ছিত হয়ে যাচ্ছে পুরা এলাকা। এলাকাবাসী বারবার জেলা প্রশাসক ও স্থানীয় প্রশাসনকে সম্মিলিত লিখিত অভিযোগ করলে প্রশাসন কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছেন না।
জনগন যতবার বাধা দিয়েছে, ততবারই আওয়ামিলীগ নেতৃবৃন্দের সহায়তায় ভুক্তভোগীদের বাড়িতে হামলা করা হয়েছে, যার তথ্য প্রমাণ প্রশাসনকে একাধিকবার প্রদান করা হয়েছে।
জনমনে প্রশ্ন উঠেছে, আওয়ামিলীগ সহ-সভাপতি হওয়ায় তার বিরুদ্ধে প্রশাসন ব্যবস্থা নিচ্ছে না।
ওয়ার্ড আওয়ামীলীগের উক্ত সাবেক সহ-সভাপতির কারনে সরকার আনুমানিক ৭ লক্ষ ৩৮ হাজার টাকা রাজস্ব লোকসান দিচ্ছেন, এছাড়াও প্রতিবছর পাইপলাইন ইন্সটল করে ভার্টিক্যাল ইরোশন সাইটে হাইড্রলিক পাম্প ব্যবহার করে বালু ডাম্পিং করায় ভাইব্রেশনে ফাটল তৈরি হয়ে পাড় ভাঙ্গছে এছাড়া তীর সংলগ্ন বালুর বেড এর মাঝে ডিশ তৈরি হওয়ায় বিশাল অংশ নদীতে বিলিন হওয়ার ঝুকি থাকায় নতুন করে লক্ষ লক্ষ টাকার সরকারি কাজ এখনও চলমান, এসব সরকারি অর্থ অপচয়ের কারন কি শুধু তিনি আওয়ামীলীগ নেতা, এটাই? এমন প্রশ্ন উঠছে সাধারণ জনগনের মাঝে।
হেমায়েতের বিরুদ্ধে বালু উত্তোলনের আরেকটি অভিযোগ থাকায়, গত ১৮/০৩/২৫ তারিখে এসিল্যান্ড উক্ত এলাকা পরিদর্শনকালে আওয়ামীলীগ সহসভাপতি হেমায়েত মোল্যা উক্ত ১নং ওয়ার্ড আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদককে ডেকে এনে পরিদর্শন কাজে বাধা দিতে আসলে এসিল্যান্ড তাৎক্ষণিক স্থান ত্যাগ করে। এমতাবস্থায় জনমনে প্রশ্ন উঠেছে, “”শতশত””” ভুক্তভোগীদের উপস্থিতিতে সম্মানিত সহকারী কমিশনার (ভূমি) ওয়ার্ড আওয়ামীলীগ সাধারণ সম্পাদকের উপস্থিতি বুঝতে পেরে কেন স্থান ত্যাগ করলেন, যেখানে সহকারী কমিশনার প্রত্যক্ষ করলেন ভুক্তভোগী জনগনকতৃক উক্ত আওয়ামীলীগ সাধারণ সম্পাদক উত্তম মাধ্যমের শিকার হলেন।
আওয়ামীলীগ সহ-সভাপতি হেমায়েত মোল্লার বড় ভাই (মোঃ নান্নু মোল্লা) অভিযোগ করেন, আওয়ামীলীগ সেক্রেটারির সহায়তায় তার নিজের জমি এবং ছোট ভাইয়ের (আঃ রহিম মোল্যা’র) জমি জোরদখল করে বালুর ব্যবসা করছে। তার দুই ভাই আরো অভিযোগ করেন,বিগত সরকারের আমলে তিনি উক্ত এলাকায় ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছে যার প্রভাব এখনো রয়েছে।
উক্ত আওয়ামী সহ-সভাপতির বিরুদ্ধে এলাকাবাসীর অভিযোগ, তিনি বিগত ফ্যাসিবাদী সৈরাচার সরকারের আমলে নাশকতামূলক কর্মকান্ডে লিপ্ত ছিলো।
তথ্যপ্রমানের ভিত্তিতে জানা গেছে, একজন বিএনপি নেতা তাহাকে প্রাথমিকভাবে প্রশ্রয় দিলেও এখন আর কোনো প্রশ্রয় দিচ্ছেন দিচ্ছেন না।
গত ১৮ অগাস্ট ২০২৫ তারিখে উক্ত আওয়ামিলীগ সহ-সভাপতির বড় ভাই, ছোট ভাই এবং গ্রামের নারী সমাজের একটি প্রতিনিধিদল সহ কয়েকজন লোহাগড়া উপজেলা টিএনও বরাবর লিখিত অভিযোগ দিলেও টিএনও কোনো দৃশ্যমান পদক্ষেপ নেননি। যদিও টিএনও মহোদয় যথেষ্ট আন্তরিক উক্ত সমস্যা সমাধানে, কিন্তু অদৃশ্য আওয়ামী লীগের শক্তির কাছে প্রশাসন অসহায় কিনা এমনটা আশঙ্কা করছে ভুক্তভোগী জনগোষ্ঠী!