সোমবার, ০৮ ডিসেম্বর ২০২৫, ১২:২৫ অপরাহ্ন

শিরোনাম
খালেদা জিয়ার অবস্থায় আছে: ডা. জাহিদ বাংলাদেশে টাইফয়েড টিকার আওতায় ৯৭ শতাংশ শিশু : রানা ফ্লাওয়ার্স দিল্লি, ঢাকাকে এখনও যে কারণে নেপাল-শ্রীলঙ্কার দৃষ্টান্ত দিচ্ছে সরকার কৃষক ও ভোক্তা উভয়ের স্বার্থ সংরক্ষণের চেষ্টা করছে – স্বরাষ্ট্র ও কৃষি উপদেষ্টা নির্বাচন ও গণভোটের প্রস্তুতি সম্পর্কে প্রধান উপদেষ্টাকে অবহিত করলেন সিইসি বাণিজ্য উপদেষ্টার সাথে থাইল্যান্ডের রাষ্ট্রদূত এর বৈঠক খাদ্যদূষণ নিয়ে প্রধান উপদেষ্টার উদ্বেগ, সংকট মোকাবিলায় সকলকে একসঙ্গে কাজ করার আহ্বান বায়তুল মুকাররম মসজিদে ইবাদতবান্ধব ধর্মীয় আবহ তৈরি হয়েছে- ধর্ম উপদেষ্টা বোয়ালমারী উপজেলা বিএনপির উদ্যোগে অনুষ্ঠিত জুলাই আন্দোলনের শহীদ ১১ স্কাউটের আত্মত্যাগে নতুন বাংলাদেশ নির্মাণের প্রেরণা খুঁজে পাই — শিক্ষা উপদেষ্টা ড. সি. আর. আবরার

দেশের পথশিশুদের ওপর চলমান যৌন শোষণ ও সুরক্ষা ঘাটতির নতুন প্রমাণ উন্মোচিত

আলী আহসান রবি - স্টাফ রিপোর্টার / ৪১ পাঠক
প্রকাশকাল সোমবার, ০৮ ডিসেম্বর ২০২৫, ১২:২৫ অপরাহ্ন

ঢাকার রাস্তায় বসবাসকারী প্রায় প্রতি তিনজন ছেলের মধ্যে একজন বেঁচে থাকার তাগিদে যৌন শোষণের শিকার হয়েছে বলে দ্য ফ্রিডম ফান্ড পরিচালিত নতুন জাতীয় গবেষণায় প্রকাশ পেয়েছে। সরকারি সংস্থা, গবেষণা প্রতিষ্ঠান এবং শিশু সুরক্ষা সংস্থার সহযোগিতায় পরিচালিত Through Her Eyes এবং Beneath the Surface শীর্ষক দুটি গবেষণার ফলাফল আজ একটি জাতীয় প্রকাশনা অনুষ্ঠানে তুলে ধরা হয়। অনুষ্ঠানে মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়, সমাজসেবা অধিদপ্তর, আতিসংঘ সংস্থা, আন্তর্জাতিক ও স্থানীয় এনজিও এবং সারভাইভার নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

ঢাকার ৬৩টি উচ্চ ঝুঁকিপূর্ণ স্থান এবং তিনটি পতিতালয় সম্প্রদায়জুড়ে পরিচালিত এই গবেষণাগুলোতে জরিপ, গুণগত সাক্ষাৎকার ও হটস্পট ম্যাপিং ব্যবহার করা হয়েছে। এগুলো সাম্প্রতিক বছরগুলোর মধ্যে শিশু যৌন শোষণ (CSEC) সম্পর্কিত সবচেয়ে বিস্তৃত তথ্যপ্রমাণ প্রদান করে। গবেষণায় দেখা যায় যে শোষণমূলক ঘটনা পার্ক, টার্মিনাল, নদীপোর্টের মতো জনসমাগম স্থানে এবং পতিতালয়ে যেখানে মেয়েরা কঠোর নিয়ন্ত্রণ ও জবরদস্তিমূলক পরিবেশে থাকতে বাধ্য হয়-দুই ক্ষেত্রেই ঘটে।

“মেযেরা ও ছেলেরা ভিন্ন পথে কিন্তু সমানভাবে বিপজ্জনক শোষণের মধ্যে আটকে পড়ছে,” বলেন দ্য ফ্রিডম ফান্ড বাংলাদেশ-এর কান্ট্রি রিপ্রেজেন্টেটিভ খালেদা আক্তার। “মেয়েদের প্রতারণা ও মিথ্যা প্রতিশ্রুতির মাধ্যমে আনা হয়, আর ছেলেদের ক্ষুধা, বাসস্থানের অভাব এবং নিরাপত্তাহীনতা কাজে লাগিয়ে শোষণ করা হয়। এই তথ্য আমাদের আরও শক্তিশালী নীতি ও স্বায়ী বিনিযোগের প্রযোজনীয়তা মনে করিয়ে দেয়।”

মেয়েদের ওপর করা গবেষণায় দেখা গেছে, কিশোরী বয়সেই মিখ্যা বিয়ের প্রলোভন বা কাজের প্রতিশ্রুতিতে অনেককে পাচারকারীরা নিয়ে যায়। একবার শোষণের মধ্যে পড়ে গেলে তাদের বেরিয়ে আসা অভ্যন্ত কঠিন হয়ে পড়ে। দারিদ্র্য, পারিবারিক ভাঙন ও অভ্যন্তরীণ অভিবাসন প্রধান ঝুঁকির কারণ হিসেবে উঠে এসেছে। তারা নিয়মিত সহিংসতা ও মানসিক আযাতের অভিজ্ঞতা বর্ণনা করেছেন।

ছেলেদের গবেষণায় দেখা গেছে, তারা প্রতিদিন খাদ্য, নিরাপদ ঘুমের স্থান এবং হয়রানি থেকে বাঁচার জন্য লড়াই করে। উল্লেখযোগ্য সংখ্যক ছেলে খাবার, আশ্রয় বা অল্প টাকার বিনিময়ে প্রাপ্তবয়স্কদের সঙ্গে যৌন সম্পর্কে জড়াতে বাধ্য হয়েছে। ছেলেদের জন্য উপযোগী আশ্রয়কেন্দ্র, কাউন্সেলিং ও পুনর্বাসনের সুযোগ এখনো অত্যন্ত পীমিত।

অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি, মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মমতাজ আহমেদ এনডিসি, শিশুদের বাণিজ্যিক যৌন শোষণ (CSEC) প্রতিরোধে আরও অন্তর্ভুক্তিমূলক পদ্ধতির ওপর গুরুদ্বারোপ করেন এবং বলেন, “একটি উন্নত সেফ হাউস এবং সমাজকল্যাণ ব্যবস্থা থাকাটা জরুরি এবং এগুলোর উন্নয়নের জন্য আমরা আপনাদের পরামর্শ চাই।” “গবেষণাগুলো আমাদের জাতীয় সুরক্ষা ব্যবস্থার গুরুত্বপূর্ণ ঘাটতিগুলোর দিকে ইঙ্গিত করছে,” বলেন সমাজসেবা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মো. সাইদুর রহমান খান। ‘সরকার শিশু সুরক্ষা সেবা আরও শক্তিশালী করতে এবং ছেলে-মেয়ে উভয়ের প্রযোজন অনুযায়ী সেগুলোকে উন্নত করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।”

সারভাইভার নেতা মোঘা, ফরিদা পারভীন পরিচয়পত্র, সামাজিক গ্রহণযোগ্যতা এবং দীর্ঘমেয়াদি সহায়তার গুরুত্ব তুলে ধরে বলেন যে এসব ছাড়া পুনর্বাসন সম্ভব নয়।

দ্য ফ্রিডম ফান্ড জানায় যে শিশু সুরক্ষায় দীর্ঘমেয়াদি বিনিয়োগ সামাজিক ও অর্থনৈতিকভাবে উল্লেখযোগ্য সুফল আনে। প্রতিষ্ঠানটি সরকার, সিভিল সোসাইটি ও সারভাইভার নেতৃত্বাধীন সংগঠনের সাথে কাজ করে সম্প্রদায়ভিত্তিক সুরক্ষা, প্রাথমিক শনাক্তকরণ এবং ট্রমা-সচেতন পুনর্বাসন সেবা আরও শক্তিশালী করার অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেছে।


আপনার মতামত লিখুন :

Comments are closed.