শুক্রবার, ১৯ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৩:৩৭ পূর্বাহ্ন

শিরোনাম
জনগণ যখন নির্বাচনমুখী হবে, তখন কোনো শক্তিই নির্বাচনকে বাধাগ্রস্ত করতে পারবে না —-স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বেগম খালেদা জিয়াকে নিয়ে আশার কথা শোনালেন ডা. জাহিদ স্বাভাবিক পরিস্থিতি বজায় রেখেই জননিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে: ডিএমপি কমিশনার জয়িতা ফাউন্ডেশন ভবনে জয়িতা বিজয় মেলা ২০২৫ এর উদ্বোধন –উপদেষ্টা শারমীন এস মুরশিদ গুম ও হাওর সংক্রান্ত অধ্যাদেশ অনুমোদন, সুইজারল্যান্ডের বার্নে বাংলাদেশের নতুন দূতাবাস দিল্লিতে যেভাবে রাতারাতি পাল্টে গেলো ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্কের দৃশ্যপট্ যুগ্ম সচিবকে নিজের গাড়িতে জিম্মি করে ৬ লাখ টাকা দাবি চালকের মামলা না থাকলেও ‘আওয়ামী সন্ত্রাসীদের’ গ্রেপ্তারের নির্দেশ স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার অপারেশন ডেভিল হান্ট ফেইজ-২ এর আওতায় ২৪ ঘন্টায় ৩৯২ জনকে গ্রেফতার করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ অপারেশন ডেভিল হান্ট ফেইজ-২ এর আওতায় ২৪ ঘন্টায় ৩৯২ জনকে গ্রেফতার করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ

একটি বিশ্ববিদ্যালয় ডিগ্রি শুধুমাত্র চাকরি পাওয়ার জন্য নয়, বরং এটি সমাজের জন্য অবদান রাখার দায়িত্ব —শিক্ষা উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. সি আর আবরার

আলী আহসান রবি - স্টাফ রিপোর্টার / ৫৪ পাঠক
প্রকাশকাল শুক্রবার, ১৯ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৩:৩৭ পূর্বাহ্ন

আজ রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালইয়ে আজ অনুষ্ঠিত হলো ২০২৫ সালের স্নাতক সমাবর্তন অনুষ্ঠান।প্রধান অতিথি তার বক্তব্যে শিক্ষা উপদেষ্টা অদ্ধ্যাপক ড. সি আর আবরার শুধু শিক্ষার্থীদের সাফল্য নয়, তাদের শিক্ষার সঙ্গে যুক্ত বড় দায়িত্বের কথাও তুলে ধরেন। এছাড়াও, বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের চেয়ারম্যান ড. এস এম এ ফায়েজ সমাবর্তন বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন।

এই ১২তম সমাবর্তন অনুষ্ঠানে সিন্ডিকেট ও একাডেমিক কাউন্সিলের বিশিষ্ট সদস্য, শিক্ষকবৃন্দ, গর্বিত অভিভাবক এবং স্নাতক ছাত্র-ছাত্রীরা উপস্থিত ছিলেন। সমাবর্তন অনুষ্ঠানটি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক উৎকর্ষতার পাশাপাশি স্নাতকদের নাগরিক দায়িত্ব এবং সমাজের প্রতি অবদান রাখার গুরুত্বও তুলে ধরেছে।

প্রধান অতিথি ড. সি আর আবরার তাদের উদ্দেশে বলেন, “একটি বিশ্ববিদ্যালয় ডিগ্রি শুধুমাত্র চাকরি পাওয়ার জন্য নয়, বরং এটি সমাজের জন্য অবদান রাখার দায়িত্ব। আপনার শিক্ষার প্রকৃত মূল্য কেবল পেশাগত সাফল্যেই নয়, বরং সমাজে আপনার অবদানের মধ্য দিয়েও পরিমাপ করা হবে।”
তিনি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাসের দুটি গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিত্ব – প্রফেসর মোহাম্মদ শামসুজ্জোহা, যিনি ১৯৬৯ সালের ছাত্র আন্দোলনে ন্যায়প্রতিষ্ঠার জন্য নিজের জীবন উৎসর্গ করেছিলেন, এবং বদরুদ্দীন উমর, যিনি সামাজিক পরিবর্তনের জন্য নিরন্তর কাজ করেছেন-তাদের দৃষ্টান্ত তুলে ধরেন। তারা উভয়ই দেখিইয়েছেন যে, শিক্ষা শুধুমাত্র ব্যক্তিগত উন্নতির জন্য নয়, বরং সমাজের কল্যাণে অবদান রাখার জন্য।

প্রধান অতিথি বর্তমান সময়ের দ্রুত পরিবর্তনশীল বিশ্বের কথা তুলে ধরেন, যেখানে প্রযুক্তি, মিথ্যা তথ্য এবং সামাজিক বিভাজন সমাজকে পুনর্গঠন করছে। এ সময়ে দক্ষ পেশাদারদের প্রয়োজন অনেক, কিন্তু সঠিক, নৈতিক এবং দায়িত্বশীল নাগরিকদেরও প্রয়োজন, যারা বুঝতে পারে যে তাদের কর্মকাণ্ডের সমাজে কী প্রভাব পড়বে। তিনি বলেন, “বাংলাদেশকে এমন স্নাতকদের প্রয়োজন, যারা শুধু তাদের পেশাগত ক্ষেত্রে উৎকর্ষ লাভ করবে না, বরং যারা প্রশ্ন করবে, তাদের সাফল্য সমাজের ওপর কী প্রভাব ফেলছে। আমরা এমন মানুষদের চাই, যারা দুর্নীতির বিরুদ্ধে দাঁড়াবে, যারা প্রতিষ্ঠানের শক্তি বাড়াবে, যারা সততার সঙ্গে নেতৃত্ব দেবে।”

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ঐতিহ্য অনুযায়ী, যেখানে সমালোচনামূলক চিন্তা এবং নাগরিক দায়িত্বের মূল্যয়ন করা হয়, প্রধান অতিথি স্নাতকদের উদ্দেশে বলেন, “আপনার সাফল্য শুধুমাত্র আর্থিক লাভ বা পেশাগত অবস্থান দ্বারা পরিমাপ করা উচিত নয়, বরং আপনাদের অবদান দ্বারা।” তিনি সতর্ক করেন, “যদি শিক্ষিত নাগরিকরা তাদের ব্যক্তিগত জীবনে সীমাবদ্ধ থাকে, তবে সমাজ অন্যায় এবং স্বৈরাচারের শিকার হতে পারে।” তিনি আরও বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর এই ভূমিকা অগ্রগামী, যা এই ধরনের পরিস্থিতি প্রতিরোধে সহায়ক।
তিনি শিক্ষার্থীদের অভিভাবক, শিক্ষক এবং পরিবারের অবদানও শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করেন। “পরিবার, বিশ্ববিদ্যালয় এবং সমাজের মধ্যে সহযোগিতা এখানেই শেষ নয়। এটি অব্যাহত থাকবে, কারণ স্নাতকরা এখন তাদের শিক্ষার সঙ্গে নতুন পথ চলতে শুরু করবে,” প্রধান অতিথি বলেন।

প্রধান অতিথি শেষে বলেন, “আপনি শুধু পেশাদার নয়, আপনি এখন দায়িত্বশীল নাগরিক। আপনি সমাজে ইতিবাচক পরিবর্তন আনতে সক্ষম।” তিনি স্নাতকদের বলেন, “আপনার শিক্ষা কেবল ক্যারিয়ার গড়ার জন্য নয়, বরং একটি ন্যায়সঙ্গত এবং মানবিক সমাজ গড়ার জন্য ব্যবহার করুন। যারা আপনাদের আগে এসেছিলেন তাদের উদাহরণ অনুসরণ করুন, এবং মনে রাখবেন, জ্ঞান একটি শক্তি, এবং সেই শক্তি সততার সঙ্গে ব্যবহার করা উচিত।”
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাবর্তন ২০২৫ একটি অধ্যায়ের সমাপ্তি নয়, বরং বাংলাদেশের জন্য একটি নতুন যুগের সূচনা, যেখানে নতুন প্রজন্মের স্নাতকরা নেতৃত্বের মাধ্যমে সমাজে ন্যায় এবং মানবিক মূল্যবোধ প্রতিষ্ঠা করবে।


আপনার মতামত লিখুন :

Comments are closed.