শনিবার, ২২ নভেম্বর ২০২৫, ১২:১৫ অপরাহ্ন

শিরোনাম
ভুটানের প্রধানমন্ত্রী শেরিং টোবগে ঢাকায় পৌঁছেছেন খুলনা বিভাগের উন্নয়নচ্যালেঞ্জে বিশিষ্টজনদের ৫ দফা সুপারিশ মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে আগামী ২৫ নভেম্বর ২০২৫ থেকে ১০ ডিসেম্বর ২০২৫ পর্যন্ত ১৬ দিনব্যাপী আন্তর্জাতিক নারী নির্যাতন প্রতিরোধ পক্ষ পালিত হবে। স্কুল শিক্ষার্থীদের নিয়ে হাইজিন ক্যাম্পেইন শুরু করলো লায়ন কল্লোল দ্য ওয়েস্টিন ঢাকা আয়োজন করছে “টেস্ট অফ অ্যারাবিয়া” – আরব বিশ্বের আসল স্বাদ ও সমৃদ্ধ রন্ধন ঐতিহ্যের এক অনন্য উৎসব প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বিএনপি চেয়ারপার্সনের সৌজন্য সাক্ষাৎ আলেমদেরকে রাষ্ট্রের দায়িত্ব পালনে এগিয়ে আসতে হবে          -ধর্ম উপদেষ্টা সশস্ত্র বাহিনী দিবস আজ ২১ নভেম্বর ২০২৫ দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরে কন্ট্রোল রুম খোলা হয়েছে প্রধান উপদেষ্টার শোকবার্তা

বার ও ক্লাবগুলো নীতিমালা ভঙ্গ বা অনিয়মের অভিযোগ প্রমাণিত হলছ লাইসেন্স বাতিলের সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার

মোঃ সিকান্দার আলী / ২৯ পাঠক
প্রকাশকাল শনিবার, ২২ নভেম্বর ২০২৫, ১২:১৫ অপরাহ্ন

ঢাকাসহ সারা দেশের বার ও ক্লাবগুলোর কার্যক্রমে নীতিমালা ভঙ্গ বা অনিয়মের অভিযোগ প্রমাণিত হলে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের লাইসেন্স বাতিলের সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। একই সঙ্গে নির্বাচনের আগে দেশের গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনাগুলোর নিরাপত্তা জোরদার এবং কেপিআই (Key Point Installation) এলাকাগুলোর সুরক্ষায় কঠোর নজরদারি ও তাৎক্ষণিক পদক্ষেপ নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
সোমবার (৪ নভেম্বর) বিকেলে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে অনুষ্ঠিত কোর কমিটির সভায় এসব বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একাধিক দায়িত্বশীল সূত্র এসব বিষয় নিশ্চিত করেছে।
বৈঠকে সম্প্রতি হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে লাগা আগুনের ঘটনাকে কেন্দ্র করে নিরাপত্তা ব্যবস্থায় দুর্বলতা বা অবহেলা আছে কিনা, তা গভীরভাবে পর্যালোচনা করা হয়। 

উপস্থিত কর্মকর্তারা জানান, বিমানবন্দরসহ দেশের গুরুত্বপূর্ণ কেপিআই স্থাপনাগুলোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা পুনর্মূল্যায়ন ও পুনর্গঠনের উদ্যোগ ইতোমধ্যে শুরু হয়েছে। বার ও ক্লাবগুলোর অনিয়মে কঠোর অবস্থান
সভা সূত্র জানায়, বিভিন্ন বার, ক্লাব ও বিনোদনকেন্দ্রে নীতিমালা লঙ্ঘন, কর ফাঁকি ও অবৈধ কার্যক্রমের বিষয়ে গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর বিশদ প্রতিবেদন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে এসেছে। এসব প্রতিবেদনে একাধিক প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে নিয়মভঙ্গ, মদ আমদানি-বিতরণে অনিয়ম, এমনকি অনুমোদনবিহীন লেনদেনের তথ্যও উঠে এসেছে। কিছু বারে অনৈতিক কার্যক্রমের প্রমাণও মিলেছে। 

সভায় উপস্থিত ছিলেন নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা ঢাকা পোস্টকে জানান, সরকার এখন জিরো টলারেন্স নীতিতে যাচ্ছে। আইন মানবে না— এমন প্রতিষ্ঠানের কার্যক্রম চলবে না।
তিনি আরও বলেন, যে কোনো প্রতিষ্ঠান সরকারি নীতিমালা অমান্য করলে লাইসেন্স বাতিল থেকে শুরু করে প্রশাসনিক ও আইনি ব্যবস্থা—সবকিছু নেওয়া হবে।
সভায় সিদ্ধান্ত হয়, বার ও ক্লাবগুলোর লাইসেন্স নবায়নের সময় তাদের নিয়মিত কর পরিশোধ, নিরাপত্তা ব্যবস্থা, অগ্নিনিরাপত্তা সরঞ্জাম, এবং সদস্যদের তথ্য হালনাগাদ—এসব বিষয় কঠোরভাবে যাচাই করা হবে। প্রয়োজনে হঠাৎ পরিদর্শন চালানোরও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

একাধিক সূত্র জানিয়েছে, জাতীয় নির্বাচনের আগে দেশের সামগ্রিক আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্থিতিশীল রাখতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ‘অপারেশনাল প্রস্তুতি’ বাড়িয়েছে। রাজধানীসহ সারা দেশে কেপিআই স্থাপনাগুলো—যেমন বিমানবন্দর, বিদ্যুৎকেন্দ্র, টেলিযোগাযোগ অবকাঠামো, গুরুত্বপূর্ণ সেতু ও সরকারি দপ্তরে—সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থায় থাকতে বলা হয়েছে।
এছাড়া, হোটেল, বার, ক্লাব ও বিনোদনকেন্দ্রগুলোতেও নিয়মিত তদারকি ও নজরদারি জোরদারের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সংশ্লিষ্ট জেলা প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে প্রতিদিনের কার্যক্রম পর্যবেক্ষণ করে নিয়মিত প্রতিবেদন পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছে মন্ত্রণালয়,
জাপানে দক্ষ কর্মী পাঠাতে কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়ার অঙ্গীকার বাংলাদেশের
যে কারণে প্রাথমিকে শরীরচর্চা ও সঙ্গীত শিক্ষক নিয়োগ প্রস্তাব বাতিল হলো
নিয়োগ প্রস্তাবনা বাতিলের সংবাদ নজরে পড়েছে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের

কোর কমিটির বৈঠকে আসন্ন নির্বাচনের আগে রাজনৈতিক অস্থিরতা ও আন্দোলন পরিস্থিতি নিয়েও বিস্তারিত আলোচনা হয়। সরকারের শীর্ষ কর্মকর্তারা জানান, নির্বাচন প্রক্রিয়া চলাকালে কোনো দাবি-দাওয়া বা আন্দোলনের চাপে সরকার নতি স্বীকার করবে না।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন সিনিয়র কর্মকর্তা বলেন, আইনের শাসন ও সংবিধানের কাঠামোর বাইরে কোনো দাবি মেনে নেওয়ার প্রশ্নই আসে না। কেউ যদি আন্দোলনের নামে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করে, আইন অনুযায়ী তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
তিনি আরও বলেন, যাদের বিভিন্ন দাবি বা অভিযোগ রয়েছে, তারা নির্বাচন শেষে নবনির্বাচিত সরকারের কাছে সেগুলো উপস্থাপন করতে পারবেন। বর্তমান সরকার নির্বাচনকালীন শৃঙ্খলা ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করতেই সর্বোচ্চ মনোযোগ দিচ্ছে।
সূত্র জানায়, সভায় স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, সরকার নিরাপত্তা ইস্যুতে কোনো ধরনের গাফিলতি বা শৈথিল্য বরদাশত করবে না। কেপিআই হোক বা সাধারণ এলাকা যেখানেই ঝুঁকি, সেখানে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এ বিষয়ে প্রশাসনিক আইন বিশেষজ্ঞ ব্যারিস্টার জাহিদ রহমান বলেন, সরকারি নীতিমালা লঙ্ঘন করলে লাইসেন্স বাতিলের মতো ব্যবস্থা নেওয়া আইনসম্মত এবং প্রশাসনিকভাবে যথাযথ। তবে এই প্রক্রিয়ায় স্বচ্ছতা ও যথাযথ নোটিশ প্রদান নিশ্চিত করতে হবে, যাতে কোনো বৈধ প্রতিষ্ঠান অযথা ক্ষতিগ্রস্ত না হয়।
তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশে বার ও ক্লাবগুলোর কার্যক্রম একটি সংবেদনশীল আইনি কাঠামোর মধ্যে পড়ে। তাই কেবল শাস্তিমূলক পদক্ষেপ নয়, বরং নিয়মিত পরিদর্শন, কর আদায়, এবং অগ্নিনিরাপত্তা মানদণ্ডে প্রশিক্ষণ জোরদার করা জরুরি। এতে প্রশাসন ও ব্যবসা উভয়ের মধ্যে বিশ্বাস ও জবাবদিহি তৈরি হবে।
জাহিদ রহমানের মতে, নির্বাচনের আগে কেপিআই স্থাপনাগুলোর নিরাপত্তা জোরদার করা রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তা ব্যবস্থার অবিচ্ছেদ্য অংশ। নির্বাচনের সময় দেশজুড়ে প্রশাসনিক চাপ থাকে। তাই আগাম প্রস্তুতি ও সমন্বিত নজরদারি সম্ভাব্য নাশকতা ও দুর্ঘটনা প্রতিরোধে কার্যকর ভূমিকা রাখবে।
এ বিষয়ে নিরাপত্তা বিশ্লেষক ও সাবেক সেনা কর্মকর্তা কর্নেল (অব.) কাজী শরীফ উদ্দিন বলেন, কেপিআই স্থাপনাগুলোর নিরাপত্তা শুধু প্রশাসনিক ইস্যু নয়, এটি জাতীয় নিরাপত্তার একটি কৌশলগত দিক। এখানে যদি একটিও দুর্বলতা থাকে, তা রাষ্ট্রের ভাবমূর্তি ও নিরাপত্তা ব্যবস্থার ওপর সরাসরি প্রভাব ফেলে।
তিনি বলেন, বিমানবন্দর, বিদ্যুৎকেন্দ্র, যোগাযোগ অবকাঠামো, কিংবা সংবেদনশীল সরকারি দপ্তর—সবগুলোই এখন ‘হাই ভ্যালু টার্গেট’। তাই শুধু নিরাপত্তাকর্মী মোতায়েন নয়, প্রযুক্তিনির্ভর নজরদারি, সাইবার সিকিউরিটি এবং দ্রুত প্রতিক্রিয়া সক্ষমতা বাড়াতে হবে।
কাজী শরীফ উদ্দিন আরও বলেন, বর্তমানে রাজনৈতিক অস্থিরতা বা নির্বাচনী সময়কে কেন্দ্র করে অভ্যন্তরীণ হুমকি যেমন বাড়ে, তেমনি বিদেশি স্বার্থ সংশ্লিষ্ট সাইবার আক্রমণ বা নাশকতার ঝুঁকিও বেড়ে যায়। এই পরিস্থিতিতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর মধ্যে রিয়েল-টাইম তথ্য বিনিময় অপরিহার্য।
তার মতে, সরকার যদি নীতিমালা বাস্তবায়নে ধারাবাহিকতা বজায় রাখে এবং নিরাপত্তা ব্যবস্থাকে শুধু প্রতিরোধ নয়, পূর্বপ্রস্তুতিমূলক কাঠামোতে রূপ দেয়, তাহলে জাতীয় নিরাপত্তা আরও টেকসই হবে।
সভায় সভাপতিত্ব করেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল অব জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী। এ সময় উপস্থিত ছিলেন— স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব, পুলিশ মহাপরিদর্শক (আইজিপি), র‍্যাব, বিজিবি, আনসার, ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স, এনএসআই ও ডিজিএফআইয়ের


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *