শনিবার, ২২ নভেম্বর ২০২৫, ০৩:১১ অপরাহ্ন

শিরোনাম
ভুটানের প্রধানমন্ত্রী শেরিং টোবগে ঢাকায় পৌঁছেছেন খুলনা বিভাগের উন্নয়নচ্যালেঞ্জে বিশিষ্টজনদের ৫ দফা সুপারিশ মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে আগামী ২৫ নভেম্বর ২০২৫ থেকে ১০ ডিসেম্বর ২০২৫ পর্যন্ত ১৬ দিনব্যাপী আন্তর্জাতিক নারী নির্যাতন প্রতিরোধ পক্ষ পালিত হবে। স্কুল শিক্ষার্থীদের নিয়ে হাইজিন ক্যাম্পেইন শুরু করলো লায়ন কল্লোল দ্য ওয়েস্টিন ঢাকা আয়োজন করছে “টেস্ট অফ অ্যারাবিয়া” – আরব বিশ্বের আসল স্বাদ ও সমৃদ্ধ রন্ধন ঐতিহ্যের এক অনন্য উৎসব প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বিএনপি চেয়ারপার্সনের সৌজন্য সাক্ষাৎ আলেমদেরকে রাষ্ট্রের দায়িত্ব পালনে এগিয়ে আসতে হবে          -ধর্ম উপদেষ্টা সশস্ত্র বাহিনী দিবস আজ ২১ নভেম্বর ২০২৫ দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরে কন্ট্রোল রুম খোলা হয়েছে প্রধান উপদেষ্টার শোকবার্তা

-কপ সম্মেলনকে ঘিরে ট্রেড ইউনিয়নগুলোর ১০ দাবি জলবায়ু সংকটের আঘাতে বিপর্যস্ত শ্রমজীবী মানুষ

মোঃ সিকান্দার আলী / ১৮ পাঠক
প্রকাশকাল শনিবার, ২২ নভেম্বর ২০২৫, ০৩:১১ অপরাহ্ন

জলবায়ু সংকট শুধু যে পরিবেশের বিপর্যয় ডেকে আনেতা নয়, জলবায়ু সংকটের প্রথম আঘাতটি আসে শ্রমজীবী মানুষের ওপর। এই সংকটের কারনে বন্যা, ঘুর্নিঝড়, তাপপ্রবাহ বা নদী ভাঙনের কারণে শ্রমজীবী মানুষের জীবনে বিপর্যয় ডেকে আনে। এ জন্য জলবায়ু সংশ্লিষ্ট প্রতিটি ধাপে যেমন-নীতি নির্ধারনে, বাস্তবায়নে ও পর্যবেক্ষনে শ্রমিক প্রতিনিধিদের অন্তর্ভুক্তি করতে হবে। গতকাল রোববার জাতীয় প্রেসক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী হলে ‘কপ-৩০-এর জন্য বাংলাদেশি শ্রমিক ও ট্রেড ইউনিয়নগুলোর দাবিনামা পেশ’ বিষয়ক সংবাদ সম্মেলন বক্তারা এসব কথা বলেন। এ সময় আগামীকাল মঙ্গলবার থেকে ব্রাজিলের বেলেমে শুরু হতে যাওয়া কপ সম্মেলনকে সামনে রেখে ১০টি দাবি তুলে ধরা হয়।

ন্যাশনাল অ্যালায়েন্স ফর জাস্ট ট্রানজিশন বাংলাদেশ (এনএজেটিবি) আয়োজিত এবং বাংলাদেশ লেবার ফাউন্ডেশন (বিএলএফ) এবং বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব লেবার স্টাডিজ (বিলস) এবং মন্ডিয়াল এফএনভির সহযোগিতায় সংবাদ সম্মেলনটি অনুষ্ঠিত হয়। বিএলএফ-এর সিনিয়র প্রোগ্রাম অফিসার ইয়াসিন আরাফাতের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বিলসের ভাইস চেয়ারম্যান এবং জাতীয়তাবাদী শ্রমিক দলের সভাপতি আনোয়ার হোসেন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন শ্রমিক কর্মচারী ঐক্য পরিষদ (স্কপ)-এর যুগ্ম সমন্বয়ক আব্দুল কাদের হাওলাদার, বিলস-এর নির্বাহী পরিচালক সৈয়দ সুলতান উদ্দীন আহমেদ, ন্যাশনাল কোর্ডিনেশন কমিটি ফর ওয়ার্কার্স এডুকেশন (এনসিসিডব্লিউই) এর মেম্বার সেক্রেটারি নাইমুল আহসান জুয়েল এবং ইন্ডাস্ট্রিঅল বাংলাদেশ কাউন্সিল (আইবিসি)-এর সিনিয়র নেতা আমিরুল হক আমিনসহ বিভিন্ন সিনিয়র ট্রেড ইউনিয়ন নেতৃবৃন্দ এবং সিভিল সোসাইটির প্রতিনিধিগণ। অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ লেবার ফেডারেশনের সাধারন সম্পাদক ও শ্রমিক কর্মচারী ঐক্য পরিষদ (স্কপ) নেতা শাকিল আখতার চৌধুরী বৈশ্বিক জলবায়ু সম্মেলনকে (কপ-৩০) কেন্দ্র করে শ্রমিকদের ১০ দফা দাবী তুলে ধরেন।

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, ব্রাজিলের বেলেমে আগামী ১১-২১ নভেম্বর অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে জাতিসংঘের ৩০ তম বৈশ্বিক জলবায়ু সম্মেলন । এই সম্মেলনকে সামনে রেখে বাংলাদেশের ট্রেড ইউনিয়ন সমূহ ন্যাশনাল অ্যালায়েন্স ফর জাস্ট ট্রানজিশন বাংলাদেশ-এর ব্যানারে ১০ দফা দাবী রেখেছে।
সংবাদ সম্মেলনে এনসিসিডব্লিউই এর মেম্বার সেক্রেটারি নাইমুল আহসান জুয়েল বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে সবচেয়ে বড় ঝুঁকির সম্মুখিন হয় দেশের শ্রমিকরা। আমাদের কৃষি খাত, পোশাক খাত, ট্যানারী সেক্টর সহ অন্যান্য ঝুঁকিপূর্ণ সেক্টরের শ্রমিকরা জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিতে রয়েছে। কিন্তু নীতিনির্ধারক পর্যায়ে এখনো শ্রমিকদের অংশগ্রহন নিশ্চিত হয়নি। আমরা জলবায়ু পরিবর্তনের ঝুঁকি নিয়ে অনেক কথা বলছি কিন্তু শ্রমিকরা উপেক্ষিত থেকে যাচ্ছে। ঝুঁকি মোকাবিলায় কপ সহ অন্যান্য সকল প্লাটফর্মে আমাদের শ্রমিকদের বিষয়টি কেন্দ্রে রেখে নীতিনির্ধারন করতে হবে।
শ্রমিকদের দাবী তুলে ধরতে গিয়ে শাকিল আখতার চৌধুরী বলেন, জাতীয় এবং বৈশ্বিকভাবে আমরা যখন জলবায়ু ঝুঁকি মোকাবিলার কথা অত্যন্ত জোরেসোরে শুনতে পাচ্ছি, সেইসময় আমাদের শ্রমিকদের ঝুঁকির বিষয়টি তেমনভাবে উঠে আসছে না। আমরা স্পষ্টভাবে ঘোষণা করছি, জলবায়ু ন্যায্যতা শ্রমিক অধিকারেরই অংশ।
সংবাদ সম্মেলনে বৈশ্বিক জলবায়ু সম্মেলনকে (কপ-৩০) কেন্দ্র করে শ্রমিকদের পক্ষ থেকে যে ১০ দফা দাবী তুলে ধরা হয় তার মধ্যে আছে-জলবায়ু সংশ্লিষ্ট প্রতিটি ধাপে (নীতি নির্ধারনে, বাস্তবায়নে, পর্যবেক্ষনে) শ্রমিক প্রতিনিধি অন্তর্ভুক্তি করা, জলবায়ু অর্থায়নে শ্রমিকদের কেন্দ্রবিন্দুতে রেখে ন্যায্য অন্তর্ভুক্তিকরন, কাজের নিরাপত্তা ও ন্যায্য রূপান্তর নিশ্চিত করা, জলবায়ু নীতিমালায় শ্রমিকদের মৌলিক অধিকার সংযুক্ত করা, সকল ধরনের চুক্তিতে ন্যায্য রূপান্তর ধারা অন্তর্ভুক্ত করা, জেন্ডার-সমতা ও অন্তর্ভুক্তিমূলক রূপান্তর, স্বাধীন “পর্যবেক্ষণ কর্তৃপক্ষ” গঠন, বৈশ্বিক সংহতি ও ন্যায্য দায়বদ্ধতা, কপ৩০-কে “ন্যায্য রূপান্তর বাস্তবায়ন কপ” হিসেবে ঘোষণা করা এবং প্রতিশ্রুতিগুলো বাস্তবায়ন করা।

সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের উত্তরে বিলস-এর নির্বাহী পরিচালক সৈয়দ সুলতান উদ্দীন আহমেদ তার বক্তব্যে উল্লেখ করেন, ক্ষতিগ্রস্থ শ্রমিকদের দায়ভার নিতে হবে সরকারকে, কোম্পানিকে দায়ভার নিতে হবে ট্রেড ইউনিয়ন হিসেবে আমরা আন্দোলন সংগ্রামের ভেতর দিয়ে তাদের দাবি আদায়ে সচেষ্ট হবো। শ্রমিকদের স্বাস্থ্য উন্নয়ন নিয়ে শ্রমিক কল্যাণ ফাউন্ডেশন থেকে কিছু কাজ করা হচ্ছে তবে তা পর্যাপ্ত নয়। কার্বন নিঃসরণের জন্য বেশি দায়ী অন্যরা, কিন্তু এর মাশুল দিতে হচ্ছে আমাদের, তাই আমাদের এই দাবি, জলবায়ু পরিবর্তনের ঝুঁকি মোকাবিলায় সরকারকেই যথাযত উদ্যোগ নিতে হবে।
সভাপতির বক্তব্যে আনোয়ার হোসেন এই দাবিগুলোর গুরত্ব তুলে ধরে বলেন, সাংবাদিকরা যেনো জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে ঝুঁকিতে থাকা শ্রমিকদের বিষয়টি তুলে আনেন এবং শ্রমিকদের এই দাবীসমূহ নিয়ে আরো বেশি সোচ্চার হোন কারন সাংবাদিকদের মাধ্যমেই আমরা সরকার সহ অন্যান্য সংশ্লিষ্ট পর্যায়ে আমারা আমাদের দাবি তুলে ধরতে পারবো।
অনুষ্ঠানে বক্তারা দক্ষিন এশিয়ার একমাত্র দেশ হিসেবে এনডিসি ৩.০ তে ন্যায্য রুপান্তরে আলাদা একটি অধ্যায় যুক্ত করায় সাধুবাদ জানান। পাশাপাশি কপ২৯-এর ফলাফলে প্রত্যাশা পূরণে ব্যর্থ হয়েছে বলে উল্লেখ করেন, কপ-৩০ গৃহিত পদক্ষেপ গুলোর কার্যকর বাস্তবায়ন যেনো হয়।
##


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *